March 15, 2025, 5:32 am

নোটিশ :

জরুরি ভিত্তিতে সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে আগ্রহী প্রার্থীরা যোগাযোগ করুন।

সর্বশেষ সংবাদ : :
তিতাসের জগতপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত আত্রাইয়ে শাহাগোলা ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত তিতাসের মজিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি হলেন বিএনপি নেতা সেলিম ভূঁইয়া পুঠিয়ায় চোর চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে হাইওয়ে পুলিশ  আত্রাইয়ে নির্বাচন অফিসের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন আত্রাইয়ে গনহত্যা ও স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতি সভা হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা সপ্তাহ খেলতে গিয়ে নদীতে পড়ে শিশুর মৃত্যু দুর্গাপুরে প্রকাশ্যে লটারির মাধ্যমে ওএমএস ডিলার নিয়োগ, প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও প্রেস বিজ্ঞপ্তি বাউয়েটের ২৪তম অর্থ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের চাপে সচিব ও চেয়ারম্যান

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের চাপে সচিব ও চেয়ারম্যান

মোস্তাফিজুর রহমান জীবন রাজশাহীঃ

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের চাপে আছেন নবাগত সচিব ও চেয়ারম্যান। তবে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সচিব ও চেয়ারম্যান বলছে, চাপে নয়, মানবিক কারণে বিষয়টি নতুনভাবে দেখছেন তাঁরা।
জানা যায়, সেবাগ্রহীতা নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব ও শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সচিবকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার দুই অভিযোগে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন কতৃপক্ষ। ওই দুই কর্মকর্তা হলেন- উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম এবং সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল করিম। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা এখনো বহালতবিয়তে তাঁদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ও বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের জন্য নানাভাবে নবাগত বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবকে চাপ প্রদান করছেন বলে অভিযোগ।
বোর্ড সুত্র বলছে, ২০২৩ সালের একটি ঘটনায় একজন ভুক্তভোগী নারীর সনদে বাবা-মায়ের নাম সংশোধন আটকে রেখে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা জাহিদুর রহিম ওই নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কর্মকর্তার হাত থেকে বাঁচতে ওই নারী দুই হাজার টাকা ঘুষ দিলেও কাজ হয়নি। এ অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরে ওই দুই কর্মকতা ঝামেলা করায় কতৃপক্ষ তাঁদের বরখাস্ত করেন। এরপর থেকে শিক্ষা বোর্ডে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে মরিয়া হয়ে উঠেন রহিম ও করিম দুই ভাই। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকার পতনের পরপরই বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিবকে শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করেন তাঁরা। ঘটনার পর পরই তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও দায়ের করেন চেয়ারম্যান ও সচিব। আগের চেয়ারম্যান ও সচিব বদলী পর পরই আবারও নতুন চেয়ারম্যান ও সচিবকে ম্যানেজ করার চেষ্টাসহ নানাভাবে চাপ দিয়ে নিজেদের পূর্ণবহালে রাখার জন্য তদবির করছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর আ. এন. এম মোফাখখারুল ইসলাম গত ৮ জানুয়ারী ২০২৫ তারিখে শিক্ষা বোর্ডে যোগদান করেন। এরপর ১৬ জানুয়ারি সচিব হিসাবে যোগদান করেন প্রফেসর ড. শামীম আরা চৌধুরী। আগের চেয়ারম্যান ও সচিবের আমলে হওয়া বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করার পক্ষে খোদ বর্তমান চেয়ারম্যান ও সচিব।
উল্লেখ্য, জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে একজন সেবাগ্রহীতার সাথে প্রতারণার মাধ্যমে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সেসব সিদ্ধান্ত পাল্টে দেওয়ার জন্যই ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে বহিরাগতদের নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে যান তিনি।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ওইদিন সোমবার দুপুরে জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিমসহ ১০-১৫ জন ব্যক্তি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অলীউল আলমের কক্ষে ঢোকেন। তাদের মধ্যে আলোচনার একপর্যায়ে বোর্ড চেয়ারম্যান কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় দরজার সামনে তাকে শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর বোর্ড চেয়ারম্যান সচিব হুমায়ুন কবিরের কক্ষের সামনে যান। সচিবও ওই সময় বের হন। এ সময় সচিবকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এছাড়া চেয়ারম্যান ও সচিবকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন বহিরাগতরা। জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিম একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে কয়েকজনকে নিয়ে বোর্ডে যান। তিনি তাদের সামনে অভিযোগ তোলেন, চেয়ারম্যান ও সচিব দুর্নীতি করেছেন। আর অন্যায়ভাবে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরে চেয়ারম্যান কাগজপত্র বের করে দেখান, তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়। বরং, জাহিদুর রহমানেরই অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারপরও বোর্ডে চেয়ারম্যান ও সচিবকে লাঞ্ছিত করা হলে পুলিশ যায়। সেনাবাহিনীর একটি দলও আসে। এরপর বহিরাগতরা চলে যান।

শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. অলীউল আলম সে সময় ঘটনার বিষয়ে বলেছিলেন, তাদের শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং বহিরাগতদের নিয়ে এসে বোর্ডে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির অভিযোগে জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া দুই ভাইসহ ৩০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বোর্ড সুত্রে জানা যায়, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে দুইজন আইনজীবী আছেন। এরমধ্যে একজন আইনজীবী হলেন এজাজুল হক মানু। তিনি রাজশাহী জেলা আ’লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। তিনি ইতোমধ্যে বরখাস্ত রহিমের ব্যাপারে সুপারিশ করেছেন। অপরজন এখনো যাচাই বাছাই করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে জাহিদুর রহিমের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এসব বিষয় জানতে চাইলে শিক্ষা বোর্ড সচিব প্রফেসর ড. শামীম আরা চৌধুরী বলেন আমরা কোনো চাপে নেই। তাঁদের বিষয় আইনজীবীর মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিবে তাঁদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিবে।

কথা বললে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের নবাগত চেয়ারম্যান প্রফেসর আ. এন. এম মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, দুটি ঘটনায় তাঁরা দীর্ঘদিন বরখাস্ত। মানবিক কারণে এতো সময় তাঁরা বরখাস্ত থাকতে পারে না। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমরা দুজন আইনজীবীকে সমাধান প্রদানে সাহায্য চেয়েছি। একজন ইতোমধ্যে একটি পরামর্শ দিয়েছে। অপরজন সিদ্ধান্ত জানাইনি। তাঁদের অপরাধে যে মামলা হয়েছে সেটি বিচারাধীন। শাস্তির বিষয়টি মাথায় রেখে তাঁদের বরখাস্ত তুলে আবারও বহাল করাও হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে ক্লিক করুন




© All rights reserved © 2020 alokitobhorerbarta.com

Desing & Developed BY ThemesBazar.Com