February 14, 2025, 9:45 pm
তিতাস( কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার উজিরাকান্দি ভূঁইয়ার বাজারে ৪.৮১ শতাংশ জায়গায়সহ ৫টি দোকান জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই গ্রামের প্রয়াত নূরুল হক ভূঁইয়ার ছোট ছেলে ও তিতাস উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মনিরুল হক তপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে।এবং ওই জায়গায়তে গড়ে ওঠা দোকান মালিকদের বিতাড়িত করে জমি ও দোকান গুলো দখলে নেন তিনি।এমন অভিযোগ করে মনিরুল হক তপন ভূঁইয়ার বড় ভাই মৃত নাজমুল হক ভূঁইয়ার মেয়ে ইসরাত জাহান ফারিয়া বলেন,১৯৯৬ সালে আমার বাবাকে মেরে ফেলে আমার বড় চাচা ও ছোট চাচা,তখন আমার বয়স আড়াই বছর।তিনি আরও বলেন,আমার বাবাকে হত্যার পর বাবার সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি তাদের নামে নিয়ে নিছে।আমাকে এবং আমার মাকে সকল সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে তপন চাচ্চু।এরই মধ্যে আমি কিছু জায়গা আমার বাবার নামে পাই ওই জায়গা টুকু আমি অন্যত্র বিক্রি করে দেই,এখন সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর,আমার চাচা তপন ভূইয়া বিএনপি নেতা হওয়ায় তিনি এলাকায় এসে আমার জায়গা গ্রহিতার ভাড়াটিয়াদের দোকান থেকে বের করে দিয়ে ৫টি দোকান দখলে নিয়ে অন্য লোকের নিকট ভাড়া দিয়ে দেয়।জানা যায়,উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের উজিরাকান্দি ভূঁইয়ার বাজারের উজিরাকান্দি মৌজার ৮৪ নং খতিয়ানের ৩৪৪ নং দাগের ২২ শতক ভূমির ওয়ারিশমূলে মালিক প্রয়াত নূরুল হক ভূইয়ার ৪ছেলে।উক্ত ভূমির অন্দরে ৪.৮১ শতক ভূমি প্রয়াত নূরুল হক ভূঁইয়ার বড় ছেলে মৃত নাজমুল হক ভূইয়ার মেয়ে ইসরাত জাহান ফারিয়া ওয়ারিশমূলে মালিক হয়ে নামজারি করে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়।পরে গ্রহিতা শফিকুল ইসলাম ভূইয়া ও আমিনুল ইসলাম ইয়াছিন ভূইয়া নিজ নিজ নামে নামজারী খারিজ খতিয়ান নং ৪০৩ সৃজন করেন এবং ক্রয়কৃত ঐ ভূমিতে বিনা বাধায় দোকানঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবত ভাড়া দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও ভোগ দখল করে আসছেন তারা।সম্প্রতি আ. লীগ সরকার পতনের পর দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে,একই দাগের অপর ওয়ারিশ মনিরুল হক তপন ভূঁইয়াসহ অপরাপর সহযোগিরা ভিটাসহ দোকানঘর জোরপূর্বক দখল করে নেয়। এবং দোকানঘরের ভাড়াটিয়াদের মালামালসহ উচ্ছেদে করে নতুন করে ভাড়া দেন। এর আগে ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টায় দোকানঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং ভুক্তভোগীদের হত্যার হুমকি অভিযোগও উঠেছে প্রভাবশালী এই নেতার বিরুদ্ধে। যা তিতাস থানায় বাদী হয়ে ভুক্তভোগী জমি গ্রহিতা আমিনুল ইসলাম ইয়াসিন ভূঁইয়া একটি লিখিত অভিযোগ করেন।আমিনুল ইসলাম ইয়াসিন ভূইয়া বলেন, আমরা যাচাই বাছাই করে বৈধ পন্থায় মৃত নাজমুল হক ভূইয়ার মেয়ে ইসরাত জাহান ফারিয়ার কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেছি। এবং আমাদের নামে নামজারি খারিজও রয়েছে।এখন তপন ভুইয়া বিএনপি’র ক্ষমতা দেখিয়ে আদালতের মিথ্যা রায়ের কথা বলে দোকানদারদের হুমকি-ধমকি দিয়ে দোকান থেকে ভাড়াটিয়াদের উঠিয়ে দিয়ে দখলে নিয়ে অনত্র ভাড়া দিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তপন ভূইয়া জাতীয় পার্টির লোকজন নিয়ে এসে মরহুম রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকীর নামে শোডাউন করে,কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এখানে স্থানীয় কোনো বিএনপির নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন না।এবিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মনিরুল হক তপন ভূইয়া বলেন, জায়গার মালিক আমরা চার ভাই, বোন ও আমার মা। ফারিয়া আমাদেরকে না জানিয়ে এবং বাটোয়ারা বন্টন না করে ওর পছন্দ মতো আমাদের সম্মূখ ভাগের জায়গা বিক্রি করে দিয়েছে, পরবর্তীতে আমি জানতে পেয়ে আদালতে পিয়নশন মামলা করি এবং রায় পেয়েই আমরা আমাদের পৈতৃক জায়গা দখল করেছি। তিনি আরও বলেন,তিতাস উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম ইয়াছিন ভূইয়া, আ.লীগের প্রভাব খাটিয়ে তাদের নামে খারিজ করে নিয়েছে, সেই খারিজটি বাতিল করে দিয়েছে ভূমি অফিস। নাজমুল হক ভূইয়া হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে,তপন ভূইয়া, বলেন,ওনি আমার বড় ভাই ওনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, এসময় আমার তিন ভাই-চার বোন সকলে উপস্থিত ছিলেন এবং গ্রামবাসীকে নিয়ে ভাইকে দাফন করেছি। তখন কোনো অভিযোগ ছিলনা,এখন যা বলে সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং অন্যের প্ররোচনায় বলতেছে। দোকানি নজরুল ইসলাম বলেন,আগে ইয়াছিন ভূইয়াকে ভাড়া দিতাম,এখন ৫ আগস্টের পর তপন ভূইয়াকে ভাড়া দেই।এবিষয়ে তিতাস উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.ওসমান গনি ভূইয়া ও সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সেলিম ভূইয়া বলেন,তপন ভূইয়া আগে তিতাস উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন,বর্তমানে তিনি আমাদের দলের কেউ না,এবং ৫/৭বছর ধরে দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে তিনি সম্প্রিক্ত নেই। আমরা মনে করি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যেই তিনি দলের নাম ব্যবহার করছে, তবে জায়গা দখলের বিষয়টি সম্পূর্ণই তার ব্যাক্তিগত বিষয় এর দায় বিএনপি নিবেনা।
© All rights reserved © 2020 alokitobhorerbarta.com