January 16, 2025, 1:48 am
নিজস্ব প্রতিবদকঃ রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলায় ভূমি সহকারী কর্মকর্তার যোগসাজশে আবাসন প্রকল্পের ঘর জোর পূর্বক দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকারী বরাদ্দ পাওয়া ঘরে ভূমিহীন ব্যক্তি পরিবারসহ ঘরে উঠতে পারছেননা বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ঘটনায় সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী আব্দুল বাসিরের স্ত্রী তাহেরা বেগম জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০২১ সালের জুলাই মাসের ১৬ তারিখে সরকারের আবাসন প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের রানীনগর গ্রামে আব্দুল বাসিরকে ঘরটি বরাদ্দ দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী তাহেরা বেগম স্বামীকে নিয়ে গত (২ আগস্ট) কাজের সন্ধানে ঢাকায় গেলে। পরবর্তীতে ১০ নভেম্বরে ঢাকা থেকে ফিরে সরকারি বরাদ্দ দেওয়া ঘরটি রাজাবাড়ি ভূমি অফিসের তহশিলদারের যোগসাজশে একটি প্রভাবশালী চক্র দখল করে ঘরটি তালাবদ্ধ করে রেখেছিল বর্তমানে বিয়ানাবোনা গ্রামের সুজন এবং তার স্ত্রী রাশিদা বেগম সেই ঘরে বসবাস করছেন বলে জানা যায়।
ঘর দখলের বিষয়ে ভুক্তভোগী তাহেরা বেগম গত ১৪ নভেম্বরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলামের কাছে একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন এতে কোন সুফল না পেয়ে গতকাল (৯ ডিসেম্বর) রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের দারস্থ হন।
জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের নিকট অভিযোগ দায়ের পর থেকে বরাদ্দের ঘরে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের লোকজন তাহেরা বেগম ও তার স্বামীকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। অসহায় পরিবারটি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ভুক্তভোগী তাহেরা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার স্বামীর নামে বরাদ্দের ঘরে উঠতে গেলে অবৈধভাবে বসবাসকারীর পরিবারের লোকজন আমাকে গালাগালি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে মারতে আসছে।এখন আমাদের থাকারমত কোন জায়গা নাই। আমার স্বামীর নামে বরাদ্দ থাকা ঘরটি আমাকে বুঝে পেতে প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাই।
এ বিষয়ে রাজাবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, এই মহিলা তার স্বামীর নামে আবাসন প্রকল্পের ঘরটি এখন যারা বসবাস করছেন তাদের কাছে মৌখিক ভাবে বিক্রি করেছিলেন। যে পরিবারটি এখন বসবাস করছে তাদেরকে ঘরটি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সব কাগজপত্র তৈরীর প্রক্রিয়া চলছে।
সরকারী আবাসন প্রকল্পের ঘর কিভাবে আরেকজনার কাছে বিক্রি করা যায় এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এসিল্যান্ড স্যার ভালো জানে উনিই বিষয়টি দেখছেন তার সাথে কথা বলেন আমি কিছু বলতে পারবোনা।
জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দের আবাসন প্রকল্পের ঘর অন্য কারো কাছে বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই। বরাদ্দ পেয়েও যারা বসবাস করেননা তাদের ঘরটি যাদের প্রয়োজন আমরা তাদেরকে বসবাসের সুযোগ করে দিই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত বলেন, আবাসন প্রকল্পের ঘর অন্য কারো কাছে বিক্রি করার কোন নিয়ম নেই। বরাদ্দ পেয়েও যারা বসবাস করেননা তাদের ঘরটি অন্যদের বসবাসের সুযোগ করে দিই। এখানে তহশিলদারের কোন অনিয়মের সত্যতা পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি যে কারনে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
© All rights reserved © 2020 alokitobhorerbarta.com