January 22, 2025, 2:10 pm
তিতাস(কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের দেড় মাসেও সন্ধান মেলেনি কুমিল্লার তিতাসের দুই সন্তানের জননী জান্নাতুল ফেরদৌস (২৪)।গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশী তারেক মাহবুব মুন্না নামের প্রতিবেশী পরকিয়া প্রেমিকের ফোন পেয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সে।জান্নাতুল ফেরদৌস উপজেলার সাগরফেনা গ্রামের জামাল সরকারের মেয়ে ও ২সন্তানের জননী।এই ঘটনায় ১১সেপ্টেম্বর মুন্নাসহ ৭জনকে অভিযুক্ত করে তিতাস থানায় অপহরণ মামলা হলেও দীর্ঘ দেড় মাসেও জান্নাত জীবিত না মৃত সন্ধান করতে পারেনী পুলিশ।এদিকে জান্নাতকে অপহরণে প্রধান অভিযুক্ত পরকিয়া প্রেমিক তারেক মাহবুব মুন্নাসহ অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমণে নানাহ সন্দেহের উদয় হচ্ছে।সরজমিনে জানা যায়, উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের সাগরফেনা গ্রামের জামাল সরকারের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জান্নাতকে পার্শ্ববর্তী কানাই নগর গ্রামে ২০১৪ সালে বিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ৫বছরের সংসারে দু’টি সন্তানও জন্ম হয়; কিন্তু জান্নাতের স্বামী আব্দুল হান্নান প্রতিবেশী চাচাতো বোনের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে গেলে সংসারে অসান্তির সৃষ্টি হয় এবং ২০১৯সালে সংসার ভেঙ্গে যায়।এদিকে স্বামীর সংসারে থাকাবস্থায় সাগর ফেনা গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে মুন্না জান্নাতকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। সে সুবাদে জান্নাত মুন্নার প্রেমে জড়িয়ে পরে এবং বিষয়টি গ্রামবাসির মাঝে জানাজানি হলে উভয় পরিবারের মাধ্যমে ২০২৩ সালে গ্রাম্য শালিসে জান্নাত ও মুন্নার ৫লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ ধার্য্য হয়। কিন্তু মুন্না জান্নাতকে বিয়ে না করে শালিশ শেষে রাতেই গোপনে প্রবাসে চলে যায়।এদিকে চলতি বছরে আগস্টের দিকে মুন্না ছুটিতে দেশে এসে তিতাসের কলাকান্দি ইউনিয়নের কলাকান্দি গ্রামে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে ফেলে। এ নিয়ে জান্নাত ও মুন্নার মাঝে ঝগড়ার সৃষ্টি হলে কৌশলে গত ৫সেপ্টম্বর সকালে মুন্না জান্নাতকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর মুন্না বাড়ীতে ফিরলেও জান্নাতের কোন হদিস মিলেনি।এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনকে সাথে নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পর জান্নাতকে কোথাও না পেয়ে তার মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে গত ১১সেপ্টেম্বর তারেক মাহবুব মুন্না ও তার মামা নাঈমসহ ৭জনকে আসামি করে থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।মামলার বাদি জান্নাতের মা হালিমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, আমার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য মামলা করলেও পুলিশ গত দেড় মাসেও আমার মেয়েকে জীবিত না মৃত পুলিশ কোন তথ্য দিতে পারেনী। আমার মেয়েকে মুন্না গুম করে সে তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে; তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে না। মুন্নাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আমার মেয়ের সন্ধানের দাবী জানাচ্ছি।এদিকে পুলিশের এমন উদাসিনতায় নানাহ মুখরোচক কথার চাউড় চলছে এলাকাজুড়ে। এলাকাবাসী বলছেন পুলিশ মুন্নার পরিবারের প্রতি পুলিশের দুর্বলতা রহস্যই প্রকাশ পায়। তাদের দাবি মুন্নাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জান্নাতের সন্ধ্যান পাওয়া যাবে।জান্নাতের মামা এনামুল হক বলেন, আমরা জান্নাতকে উদ্ধারের জন্য কুমিল্লা এসপি স্যারের কাছে গিয়েছি; থানায় প্রতিদিন যাচ্ছি; পুলিশ শুধু বলে “আমরা চেষ্টা করছি।” তাদের সন্দেহ পুলিশ কি আসলেই চেষ্টা করছে?মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. কাউছার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চেষ্টা করছি এবং মোবাইল নাম্বার ট্রেকিং করে কিছু লোকেশন পেয়েছি। কিন্তু সেখানে মুন্না নাই। তার পরও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
© All rights reserved © 2020 alokitobhorerbarta.com