October 5, 2024, 11:47 am
মোহনপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা ও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রকল্পের কাজে নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার একটি অভিযোগ বিভিন্ন দফতরে জমা দেন উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে ওহাব। গত ১০ সেপ্টেম্বর লিখিতভাবে বিস্তর অভিযোগটি জমা দেন তিনি। অভিযোগে যেসকল কাজে অনিয়ম হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এছাড়াও অভিযোগটি যাচাই-বাছাই না করে মনগড়া সংবাদ প্রকাশের নিন্দা জানান তারা।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চালায় স্থানীয় সাংবাদিকেরা। অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ৩টি ডরমিটরি ভবন (কোয়ার্টার) সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষন কাজ নাম মাত্র করে বিল তুলে নিয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অথচ এই তিনটি ভবন একেবারেই জরাজীর্ণ অবস্থায় বসবাসের অনুপযোগী ছিলো। যা সম্পূর্ণ রুপে সংস্কার করে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলা হয়েছে। এসব ভবনে বর্তমানে যারা বসবাস করছেন তাদের বরাতে সংস্কার কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছেন ঠিকাদার বলে জানা গেছে। এ সংস্কার কাজের বিলের বিষয়ে অভিযোগে প্রতিটা ভবন ১০ লক্ষ টাকা করে বিল দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ কাগজপত্র ঘেটে ট্যাক্স ভ্যাট বাদে প্রতিটা ভবন সংস্কার বাবদ ৮ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ধারাবাহিকভাবে বুঝিয়ে দেন কর্মকর্তারা। এছাড়াও অভিযোগে যেসকল আইডি নম্বর ব্যবহার করা হয়ে তা সম্পূর্ণ মনগড়া ও ভূয়া বলে প্রতিয়মান হয়েছে।
অভিযোগে, উপজেলা পরিষদ চত্তরের মেইন রাস্তার কাজ না করেই ইউএনও’র যোগসাজশে সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলী ৯ লক্ষ ৯৮ হাজার ৯ শত টাকা আত্মসাত করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ বাস্তবে আরসিসি রাস্তাটি সম্পূর্ণ দৃশ্যমান রয়েছে। এখানেও সম্পূর্ণরুপে মিথ্যাচার করেছেন অভিযোগকারী। এ কাজ ৩ দিনের মধ্যে শেষ করার কথা অভিযোগে উল্লেখ থাকলেও এ কাজে সময় লেগেছে অন্তত ১ মাস। কাগজপত্র অনুযায়ী এ কাজের আদেশ হয় ২৫ জানুয়ারি, কাজ শুরু হয় ২৬ জানুয়ারি, আর কাজ সম্পন্ন হয় ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। এ কাজ বাবদ ট্যাক্স ভ্যাট বাদে ৮ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা ব্যংক থেকে উত্তোলন করে বিধি মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করা হয়।
এছাড়াও উক্ত অভিযোগে যেসকল অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কথা উল্লেখ রয়েছে, সেগুলোও সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কর্মকর্তারা। এখানে একটি দূর্নীতিগ্রস্থ সিন্ডিকেট উপজেলা প্রশাসনকে বিতর্কিত করতে নানান ফন্দিফিকির করছেন বলে জানান কর্মকর্তারা। সিন্ডিকেটটি মনগড়াভাবে বিভিন্ন দফতরের মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযোগপত্রে মূল অভিযোগকারী ছাড়াও আরো ৩ জন স্বাক্ষর করেন। যা যাচাই-বাছাই করে জানা যায়, স্বাক্ষরকারীরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিষয়ে ততটা অবগত নন। তাদেরকে মূল অভিযোগকারী ওহাব প্রভাবিত করে অন্যায়ের প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করার কথা বলে স্বাক্ষর নিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সু-নির্দিষ্ট ভাবে তাদের কোন ধারণা নেই। প্রতিবেদকের কাছে এমনটি শিকার করেছেন স্বাক্ষরকারীরা।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, প্রত্যেকটি কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যেহেতু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তারাই এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে দেখবেন।
© All rights reserved © 2020 alokitobhorerbarta.com