December 6, 2024, 12:30 am
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বৈষম্যবিরোধী আনন্দোলন দমনে ৩ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজশাহীর মাঠে সক্রিয় থাকা পশ্চিমাঞ্চল রেলের শ্রমিকলীগ করা শতাধিক নেতাকর্মী গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। দীর্ঘদিন তাঁরা কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এতে ওই সব পদে রেলের কাজ কর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার অবসরে যাওয়ায় ওই শূন্যপদে ভারপ্রাপ্ত দ্বায়িত্বে আছে অতিরিক্ত জিএম আহম্মদ মাসুম।
রেল শ্রমিক লীগের ওপেন লাইন শাখার সভাপতি জহুরুল ইসলাম বর্তমানে অবসরে আছেন। তাঁর দুই ছেলে মামুন ও সুমন এখনো রেলে কর্মরত হলে বর্তমানে তারা পলাতক। ওপেন লাইন শাখা ও রাজশাহী মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার আলীও বর্তমানে পলাতক। তার কর্মরত বুকিং সহকারী পদটি বর্তমানে ফাঁকা পরে রয়েছে। অপরদিকে হেবি ওয়েট নেতা ও লুটপাটের মহানায়ক সিসিএম (পশ্চিম) ক্লেইম ইন্সেপেক্টর মেহেদী হাসান দীর্ঘ ১ বছর আগে থেকেই ঢাকায় অবস্থান করেন। কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকায় তাকে অফিস করতে হয় না। আ’লীগ পন্থী সিসিএম অফিস না করলেও তাদের বেতন ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছেন। পশ্চিম রেলের নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসে কর্মরত দেব্রত সেনহা দেবু বর্তমান আরবিআর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনিও পলাতক। ওই কমিটির সভাপতি আইনুল হকও সিওপিএস অফিসে কর্মরত। তিনিও অফিসে আসছেন না। আরবিআর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ( ১) সাদিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত সম্পাদক জয়েদ হোসেন , সহ সভাপতি মান্নান বাবু , যুগ্ম সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, সহ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ মজুমদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হবি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তাজমুল হক, সহ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, সিএমও অফিসের আনোয়ার, আশরাফ, হিসাব শাখার জসিম, সিওএস অফিসের রিদয়, স্ট্রেট অফিসের মহসিন, সদস্য আজমুল হক রাজু, সদস্য সাব্বির হোসেন, সদস্য মামুন, রাব্বিসহ রেল শ্রমিক লীগের শতাধিক নেতাকর্মী গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় ব্যাপক লুটপাটসহ নানা অনিয়ম দূর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এরা। সকলেই প্রায় আঙুল ফুঁলে কলা গাছ হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আনন্দোলন দমনে সক্রিয় ভুমিকায় অস্ত্রসহ মাঠে ছিলেন তাঁরা। এদের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্নীতির একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হলেও ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় বহালতবিয়তে ছিলেন তারা। রেলের আ’লীগ পন্থী সিএমও, সিসিএম, সিওপিএস, সিওএস, সিইই,সিএসটি, চীফ কমান্ডেন্টসহ অনেকের আশ্রয় প্রশয়ে ছিলেন এসকল নেতা। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জিএম আহম্মদ মাসুমও অনুপস্থিতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এসব বিষয়ে কথা বললে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়ক অনেকে বলেন পলাতকরা কর্মস্থলে না আসলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। রেলেও দ্রুত সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
রেলের অনেক সূত্র বলছে মামলা হামলা থেকে বাঁচতেই তাঁরা আত্মগোপনে চলে গেছে। অনেকেই আবার ভোল্ট পাল্টাতে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের আশ্রয় খূঁজছেন।
এসব বিষয়ে জানতে শ্রমিকলীগের নেতাদের ফোন করা হলে প্রায় সকলের ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়।
কথা বললে পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) আহমদ মাসুম বলেন, আমি এসব বিষয়ে বক্তব্য দিতে বাধ্য নই। বক্তব্য নিতে হলে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করতে হবে। এছাড়াও একজন জিএম এসব বিষয়ে খোঁজ রাখে না। আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানি না।
© All rights reserved © 2020 alokitobhorerbarta.com