December 6, 2024, 1:29 am
মাহাবুব আলম,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড়-কাশিপুর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) রেজাউল করিমের ২২ সেপ্টেম্বরের পর আবারও উৎকোচ গ্রহনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, গত রবিবার ঐ ভুমি অফিসে এক ব্যাক্তি ১০টাকা খাজনা দিতে যায়। এতে ১০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা নেন সংশ্লিষ্ঠ্য ভূমি কর্মকর্তা। টাকা লেনদেনের ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অথচ ভূমি অফিসের দেওয়ালে লেখা রয়েছে আমি এবং আমার অফিস দুর্নীতি মুক্ত। যেখানে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যাক্তি বলেন, টাকা না হলে খারিজ হবে না,বাধ্য হয়ে আমি সোমবার খারিজ বাবদ ৮হাজার টাকা দিয়েছি সংশ্লিষ্ঠ্য তহসিলদারকে।
এছাড়াও ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ঐ কর্মকর্তার নামে টাকা লেনদেনের আরএকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। রবিবার (২১ এপ্রিল) ১০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ শত টাকা নিয়ে খাজনা রশিদ দিয়েছে সহকারী ভুমি কর্মকর্তা রেজাউল করিম। অথচ দেশের সকল ইউনিয়ন ভুমি অফিস কে ক্যাশলেস অফিস ঘোষণা করা হয়েছে। ভূমি অফিস সূত্রে জানাগেছে, ঐ ভ‚মি কর্মকর্তা ভদেশ্বরী মৌজার ১৩৪ নম্বর হোল্ডিং এর ৫২৫/১ খতিয়ান ভুক্ত ২০.০০ (বিশ) একর পরিত্যক্ত সম্পত্তির ভুমি উন্নয়ন কর আদায় করে সরকারি স্বার্থের ক্ষতি সাধন করেছেন। বিষয়টি তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভুমি) ইন্দ্রজিৎ সাহা ১৪-০৮-২২ সালে ৪৯৫ নম্বর স্বারকে ভুমি কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশের জবাব এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
স্থানীয় সুত্রে আরো জানাযায়,তাঁর কর্মকালীন সময়ে তিনি কমপক্ষে ১০০.০০ (একশত) একর এর অধিক সরকারি সম্পত্তিকে ব্যক্তিমালিকানা সম্পত্তি দেখিয়ে সেগুলির নামজারির প্রস্তাব প্রদান, ভুমি উন্নয়ন কর গ্রহন, অথবা হোল্ডিং অনুমোদন এর মাধ্যমে সরকারি স্বার্থের ক্ষতি সাধন করেছেন। অনুমোদিত খারিজ কেসসমুহ এবং তাঁর মাধ্যমে ইস্যুকৃত খাজনার দাখিলা ও অনুমোদিত হোল্ডিংগুলি যাচাই করলে এর সঠিক পরিমান জানা যাবে।
এলাকার কিছু ভুমি জালিয়াত চক্র উক্ত খাজনা-খারিজের কাগজ দেখিয়ে চলমান আর এস জরিপে সে সকল সরকারি সম্পত্তি নিজ নামে রেকর্ড করিয়ে নিচ্ছেন। তিনি ২৭-০৩-২০১৯ সাল হতে দীর্ঘ ৫বছর একই অফিসে কর্মরত থাকার দাপটে তিনি কাউকে কোন কিছুই তোয়াক্কা করছেন না। ধর্মগড় ইউনিয়নের বেংপোখর গ্রামের দবির উদ্দিনের ছেলে মোফাজ্জল বলেন,আমি একটা খারিজ বাবদ অনেক দিন ধরে ঘুরতেছি, আজ নয় কাল এই ভাবে দিন ক্ষেপন করতেছে। এইটা কাগজ লাগবে ঐটা লাগবে,বলে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে শেষে মোটা অংকের টাকা চেয়েছে আমার কাছে টাকা না দিলে খারিজ হবে না মর্মে জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিম গত সোমবার এ প্রতিনিধিকে বলেন, ১০ টাকা খাজনা বড় বিষয় নয় তিনি আমাকে ৫শ টাকা চা খেতে দিয়েছেন। ক্যাশল্যান্ড অফিসে টাকা লেনদেন বিষয়ে তিনি বলেন, জমি মালিকদের বিকাশ নাম্বার থাকেনা তাই তারা আমাকে টাকা দেয় আমি ক্যাশ প্রেমেন্ট করে থাকি। ২২ সালে টাকা লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,তখন অফিসে হাতে হাতে টাকা লেনদেন হতো তাই সে ভিডিওটি কেবা কাহারা করেছে। ভদেশ্বরী মৌজার ১৩৪ নম্বর হোল্ডিং এর ৫২৫/১ খতিয়ান ভুক্ত ২০.০০ (বিশ) একর পরিত্যক্ত সম্পত্তির ভ‚মি উন্নয়ন কর আদায় করে সরকারি স্বার্থের ক্ষতি সাধন করেছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগেও তহসিলদারা নিয়েছে আমিও নিয়েছিলাম এবং এসিল্যান্ড স্যার আমাকে শাস্তি সোরুপ শোকজ নোটিশ প্রদান করেছিলেন।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সহকারি কমিশনার ভূমি রাকিবুল হাসান বলেন, ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। সংশ্লিষ্ঠ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
© All rights reserved © 2020 alokitobhorerbarta.com